আঠার পারা কোরুআন মুখস্থ পড়া Part 17 | হযরত আব্দুল কাদের জিলানী এর জীবনী

Abdul Kadir Jilani Ar Jiboni,

আঠার পারা কোরুআন মুখস্থ পড়া

বড়পীর সাহেবকে মক্তবে ভর্তি করার সময় ওস্তাদগণ তাঁর সাথে প্রাসঙ্গিক আলােচনা করে
নিলেন। তারপর তাকে প্রাথমিক স্তরের ছাত্র মনে করে শিক্ষক তাঁকে তাসমিয়া পড়ে শুনাতে
বলেন। ছাত্র সাধারণত তাসমিয়া পাঠ করে থামবে তারপর ওস্তাদ দ্বিতীয় হবক দিবেন। এটাই
নিয়ম। কিন্তু ঘটনা হয়ে গেল অন্যরকম। বালক হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম পাঠ করে আর থামলেন না। তিনি পবিত্র কোরআনের প্রথম সূরা
হতে মুখস্থ পাঠ করতে আরম্ভ করে দিলেন। ওস্তাদজী তাঁকে কোরআন মুখস্থ করতে দেখে
মনােযােগ সহকারে শুনতে লাগলেন।

বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) আর
থামলেন না শুধু পাঠ করে যেতে লাগলেন। তিনি নির্ভূলভাবে সুললিত কণ্ঠে অনর্গল পাঠ করে
চললেন। ওস্তাদজী অবাক হয়ে বালকের সুমধুর কণ্ঠের পবিত্র কোরআন পাঠ শ্রবণ করে চললেন।
এভাবে তিনি আঠার পারা কোরআন মুখস্থ পাঠ করে থেমে গেলেন।
হযরত বড়পীর আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)-এর অলৌকিক কাণ্ড দেখে ওস্তাদজী বিশ্ময়ে
বললেন, তুমি থামলে কেন বাবা! আরও পাঠ কর। তােমার তেলাওয়াত খুবই সুন্দর। আমার
শুনতে খুব ইচ্ছা করছে। তুমি আরও পাঠ কর।

হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) বিনীত কণ্ঠে বললেন, ওস্তাদজী! আমিতো আর
জানিনা। এ পর্যন্তই মুখস্থ করেছি। মায়ের গভে থাকা অবস্থায় আঠার পারা কোরআন মুখস্থ
করেছিলাম। এখন বাকী অংশ আপনার কাছে শিখব। ওস্তাদজী আরও বিশ্মিত হয়ে তাঁকে প্রশ্ন
করলেন। এটা তুমি কি করে সম্ভব করলে। বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)
বললেন, হুজুর! আমার মাতা কোরআন শরীফের আঠার পারার হাফেজা। আমি গর্ভে থাকা অবস্থা
তিনি অধিকাংশ সময় কোরআন তেলাওয়াত করতেন। আমি তা শুনতে পেতাম। এভাবে শুনে
শুনে গর্ভে থাকা অবস্থায় আমি আঠার পারা পর্যন্ত মুখস্ত করে ফেলি। ওস্তাদজী বালকের মুখে এমন
কথা শুনে খুব খুশি হলেন এবং মহান আল্লাহর দরবারে হাত তুলে তার জন্যে দোয়া করলেন।


বড়পীর হযরত আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ)-এর বাল্যজীবনের আর একটি উল্লেখযোগ্য
ঘটনা আছে। তখন তিনি মায়ের দুধ পান করেন। তখন তার বয়স দুবছর। সে বছর রমযানের
উনক্রিশ তারিখে চাঁদ দেখা যায়নি। চাঁদ না দেখায় লােকের মনে সন্দেহ দেখা দিল। পরের দিন
ঈদ হবে এ হল সবার ধারণা। কিন্তু এ ব্যাপারে কেউ সিদ্ধান্ত দিতে পারছিল না। কেহ ঈদের
নামায পড়ার পক্ষে আবার কেহ রােযা থাকার পক্ষে। এভাবে মানুষ দু দলে ভাগ হয়ে গেল।
অবশেষে তারা সবাই সিদ্ধান্ত নিল সাইয়্যেদ আবু সালেহ মুসা (রহঃ) যে সিদ্ধান্ত দিবেন তাই
সঠিক হবে।


সকালে সবাই সাইয়্যেদ আবু সালেহ মুসা (রহঃ)-এর বাড়ির সামনে উপস্থিত হল। তাদের
কথা শুনে বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করে তাঁর স্ত্রী উম্মুল খায়ের ফাতেমা (রহঃ)-এর কাছে থেকে
জানতে পারলেন। শিশু আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) আজ দুধ ও পানিয় কিছুই মুখে দেয়নি।
সে রােযা পালন করছে। পবিত্র রমযানের শুরু হতেই তিনি দিনের বেলায় আহার করেননা।
আজও কোন আহার গ্রহণ করছেন না। এতে বােঝা যায় চন্দ্র উদিত হয়নি।
সাইয়্যেদ আবু সালেহ মুসা (রহঃ) তার ছেলের রােযা রাখার কথা উপস্থিত সবাইকে জানিয়ে
দিলেন। তিনি আরও বললেন, আমার শিশু পুত্র আবদুল কাদের জিলানী (রহঃ) সম্পূর্ণ রােযার
মাস রােযা পালন করেছে। কাজেই বােঝা যায় ঈদের চাঁদ উদিত হয়নি।

বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী ( রহঃ ) এর জীবনী 

Post a Comment

0 Comments